আমাদের পরিবেশ
Part - 4
Class V ( Poribesh )
ধসে রাস্তা বন্ধ
রেডিয়োর খবরে দীপেন ধসের কথা শুনল। দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ির পথে ধস নেমেছে। সব গাড়ি ঘুরপথে যাচ্ছে। স্কুলে এসে সে অন্যদের বলল সেকথা। ধস কী? কীভাবে হয়? শেষে স্যারকে জিজ্ঞাসা করল।
| স্যার বললেন – মাটি ধসে পড়া দেখোনি?
পুকুর পাড়ের মাটি মাঝে মাঝে ধসে পড়ে। -পুকুরের পাড় খাড়া। সেইরকম খাড়া পাহাড়ের রাস্তার ধার। উপরে দেখবে একটা বড়ো পাথর। হয়তো তার তলায় মাটি। উপরের পাথরটা অনেক দিন ধরে একটু করে সরছে। খুব বৃষ্টিতে তলার মাটিটা গলে গেল। পাথরটা পড়ে গেল। পড়ার সময় আরও কিছু গাছ-পাথর নিয়ে পড়ল। ভূমিকম্প হলেও পাহাড়ে ধস নামে। রানু বলল— বড়ো গাছ থাকলে সহজে এমন হয় না। ঘাসের চাপড়া থাকলেও ধসে না।
কিন্তু, গাছটার গোড়ার কাছের মাটি ধসে না।
---এই তো বেশ দেখেছ। সব জায়গায় এমন পাড় ভাঙে। এভাবে মাটি সরে যাওয়াকে বলে ভূমিক্ষয়। সাবিনা হেসে বলল – বুঝেছি। তুমি তো মাটি। ক্ষয় হওয়া মানে নষ্ট হওয়া।
সুবীর বলল— কী করে জানলি? তুই পাহাড়ে গিয়ে দেখেছিস?
— তা নয়। পুকুরের কথা বলছি। আমাদের পুকুরের পাড়ে একটা জামগাছ আছে। ঝড়বৃষ্টির পর পাশের মাটি ধসে পড়ে।
কীভাবে ভূমিক্ষয় বাড়ে ভেবে দেখো। ধরো, একটা পলিথিন। তার উপরে মাটির যে কণা আছে তার সঙ্গে নীচের কণার ছোঁয়া থাকে না। ফলে জোর বৃষ্টি বা ঝড় হলে উপরের মাটি সরে যায়।
| মিনতি বলল— সেইজন্যই বলে, পাহাড়ে পলিথ্রিন, প্লাস্টিকের কাপ, ওষুধের মোড়ক এসব ফেলা যাবে না। দীপেন বলল— আর-গাছ কাটা যাবে না। মাটি ধরে রাখে এমন গাছ লাগাতে হবে। তাহলেই সে কমবে।
চেনা চেনা জলাশয়
নাম তার মোতিবিল বহুদুর জল
হাঁসগুলি ভেসে ভেসে করে কোলাহল।
পাঁকে চেয়ে থাকে বক, চিল উড়ে চলে
মাছরাঙা ঝুপ করে পড়ে এসে জলে।
| সহজ পাঠ প্রথমভাগ পড়ার সময় থেকেই কালাম মোতিবিলটা খুঁজছে। বাড়ির পাশের পুকুরেই হাঁসের দল ঘোরে। মাঝে মধ্যেই মাছরাঙা ছোঁ মেরে মাছ নিয়ে যায়। পাড়া ছেড়ে একটু গেলেই চখাচত্রি বিল। সেখানে বক পাঁকের মধ্যে মাছ। খোঁজে। একদিন একটা চিল সাঁ করে এল। জল ছুঁয়ে নখে করে মাছ নিল। উড়ে গেল।
বিলের পাশ দিয়ে রাস্তা। তার ওপাশে একটানা নয়ানজুলি। ওটাও জলাশয়। মাছ আছে ওখানেও। নয়ানজুলিতে লোকেরা মাঝেমধ্যে মাছ ধরে। নিজেরা খায়, বিক্রি করে। কালাম স্কুলে এসব বলায় দিলীপ বলল— গাঁয়ের শান বাঁধানো পুকুরটার কথাই ভুলে গেলি! আর দক্ষিণপাড়ার মাছের ভেড়িগুলো?
স্যার বললেন— শুধু ওটা কেন? আরও জলাশয় আছে। তবে আজকাল অনেক পুকুরের চারপাশ পাতা করে দেওয়া হচ্ছে। তাতে কচ্ছপ, ব্যাঙের মতো অনেক জীবের বিপদ হতে পারে। বাড়ি থেকে স্কুলের পথের পাশের সবকটা জলাশয়ের মানচিত্র আঁকতে পারবে।
তিয়ান বলল— বোর্ডে আঁকব?
—আঁকবে। আগে বলত ঘরবাড়ি কীভাবে দেখাবে?
তিয়ান বলল- ওসব দেখাব জলাশয়-মানচিত্র তো।
কালাম বলল- তোদের তো দুটো রাস্তা। একটা রাস্তার পাশে বাঁওড় আছে। সেটা কীভাবে দেখাবি? হাসি বলল-বাঁওড় কী?
রেবা বলল— নদীর বাঁকে খানিকটা জায়গা নদী থেকে আলাদা হয়ে বন্ধজলা হয়ে যায়। তাকে বলে বাঁওড়। আকাশ বলল—স্যার, পাহাড়ি অঞ্চলে ঝরনা আছে।
—তুমি আগে পাহাড়ি অঞ্চলে থাকতে, তাই না? পাহাড়ে অনেক ছোটো ছোটো ঝরনা আছে। তাদের বলে কোরা --- সেখানকার জলাশয়-মানচিত্র
নতুন জলাশয়
সাবিনাদের বাড়িটা স্কুল থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে। এদিকটায় বিল-ভেড়ি কিছুই নেই। একটু শহরের দিক তো! নদীটাও উত্তর থেকে দক্ষিণে গেছে। শুধু বাড়ি আর পাঁচটা পুকুর। তার দুটো ঘাট শান-বাঁধানো।
সাবিনা রাস্তার পাশের জলের কলগুলো দেখতে লাগল। আট জায়গায় কল। তার মধ্যে তিনটে ভাঙা। জ্বল পড়েই যাচ্ছে। দুটো কলে কেউ জল নিতে আসেনি।
পরদিন সবাই নিজের আঁকা মানচিত্র দেখাল। অন্তরাদের বাড়ি স্কুলের উত্তর-পশ্চিমে। তার মানচিত্রে আনেক ছোটো ডোবা রয়েছে। শিবা দেখিয়েছে দক্ষিণ-পূর্বটা। ওদিকে চারটে শান-বাঁধানো পুকুর। তিয়ান এঁকেছিল দক্ষিণ-পশ্চিমের মানচিত্র। অন্যরাও এঁকেছে। সাবিনা একাই এঁকেছে উত্তর-পূর্ব দিকের মানচিত্র। আসলে ওদিকের বেশি ছেলেমেয়ে এই স্কুলে পড়ে না। স্যার চারদিকের চারটে মানচিত্র নিয়ে বোর্ডে লাগিয়ে দিলেন। বললেন—এই হলো স্কুলের চারপাশের জলাশর-মানচিত্র।
এটা ভালো করে দেখে নাও। কোথায় কোন জলাশয় আছে। তারপর নিজেরা আঁকবে।
. অন্তরা বলল-স্যার, জলের কলটা কি জলাশয়
স্যার হেসে বললেন- আমিও তাই ভাবছি। জলাশয় না হোক জলের উৎস তো বটে। একটা জালের কল থেকে রোজ - ওঁতটা জল পড়ে? তুমি যে ডোবা দেখিয়েছে তার সবচেয়ে ছোটোটা ভরতি হবে। একটু থেমে আবার বললেন,
অনেকেই শহরে থাকে। তারা তো দু-একটা পুকুর ছাড়া জলাশয় দেখাতে পারবে না। সাবিনা ভালোই করেছে। শহরের জলের ট্যাঙ্ক, রাস্তার পার্শের জলের কল আর পুকুর দেখিয়েছে। তার চিহ্ন ঠিক করেছে।
অন্তরা বলল– একটা কল থেকে একদিনে অনেক জল পড়ে। কতটা জল পড়ে তা কি হিসেব করা যায়।
নিশ্চয়ই করা যায়। ভাবতে থাকো। কীভাবে করা যাবে।
স্রোতের জল, স্থির জল
ফেরার পথে আকাশ বলল-পাহাড়ের বেশিরভাগ জলাশয়ে খুব স্রোত। অন্তরা বলল— উঁচু-নীচু তো। যেখানেই নীচু পাবে জল সেদিকে হুহু করে যাবে।
|রফিকুল বলল – বর্ষাকালে এখানেও মাঠের পাশে নালায় স্রোেত হয়। নয়ানজুলিতেও স্রোত দেখা যায়। কোনদিক থেকে কোনদিকে জল যায় দেখেছিস? দেখলেই এখানকার জমি কোথায় উঁচু কোথায় নীচু বোঝা যাবে।
-নীচু জায়গাগুলোয় বৃষ্টির জল জমে। জলাশয় হয়ে যায়। সাবিনা বলল - বাড়িতে ব্যবহার করা জলও পুকুরে পড়ে। – তোদের ওদিকে পড়ে। চারপাশে পাকা ড্রেন। মাঝখানে পুকুর। তাই ড্রেনের জল আসে। গরমেও জল শুকোয় না। রফিকুল বলল- ড্রেনের
নোংরা জল পুকুরে জমে?
সাবিনা বলল- তবে জলটা তত নোংরা হয় না। কিন্তু কেন হয় না?
স্যার বললেন – বাতাস বয়। বাতাসের অক্সিজেন জলে গুলে যায়। জলে-পড়া নোংরার সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে। সেগুলো ভেঙে দেয়া --স্যার, রাসায়নিক - বুধে লেবুর রস দিলে হয়। কাপড়ের দাগে লেবুর বাস দিয়ে
কমলা বলল-দুধ কেটে ছানা হয়ে যায়। ছানা আর ছানার জল আলাদা হয়ে যায়। ছানা আর দুধ হয় না। তিতলি বলল- জামায় দাগ উঠছিল না। লের রস দিতে উঠে গেল।রাসায়নিক বিক্রিয়া।
জলশোধনের নানাকথা
কমলা বাড়ির কাছে পৌঁছে গেল। তবুও ভাবছে। জলের সব নোংরার সঙ্গে কি বাতাসের অক্সিজেন রাসায়নিক বিক্রিয়া করে? তাহলে পুকুরে গোরু স্নান করালে ক্ষতি কি? যে যা খুশি ফেলুক না। কিন্তু তাহলে কেন ওরকম বোর্ড লাগিয়েছে পুকুরের গায়ে? নাকি বুঝতে ভুল হলো!
পরের দিন। কমলা ওর ভাবনার কথা বলল। স্যার বললেন- সব কিছুর সঙ্গে বাতাসের অক্সিজেন কী করে বিক্রিয়া করবে? প্রাকৃতিক জল শোধনে আরও অনেকের সাহায্য আছে। শুধু বাতাসের অক্সিজেন নয়। জবা বলল— অনেক কিছু মাছে খেয়ে ফেলে।
—ঠিক বলেছ। আরও অনেক ছোটো-বড়ো জীব আছে। তারা কিছু নোংরা খায়।
পুকুরে গবাদি পশু স্নান করানো, মল-সূরা পরিত্যাগ করা, বাড়ির আবর্জনা, পলিথিন ইত্যাদি ফেলা ও বাসন মাজা নিষিদ্ধ।
অন্যভাবেও জ্বলে অক্সিজেন তৈরি হয়। এই অক্সিজেন আর বাতাসের অক্সিজেন মিলে কিছু নোংরা শোধন করে। স্বপ্নার বাবা মাছ চাষ করেন। স্বপ্না বলল- মাছের ঘা সারাতে বাবা জলে একটা ওষুধ দেন। বাবা বলে ওতে জলও শোধন হয়।
ওটা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট। দুষিত জিনিস তাড়াতাড়ি ভেঙে জলশোধন করে। কমলা বলল – তবু কেন পুকুরে গোরুকে স্নান করানো বারণ? গোরুর থেকে নানারকম রোগ-জীবাণু ছড়াতে পারে বলে? -সে তো বটেই। তাছাড়া বেশি রাসায়নিক পদার্থ দিলে অন্য ক্ষতি হবে। নোংরা ফেলা যতটা সাব কমাতে হবে। তাতেও যেটুকু নোংরা হবে দুই পদ্ধতিতে শোধন করতে হবে।
স্বপ্না বলল- দুই পদ্ধতি মানে
— একটা প্রাকৃতিক পদ্ধতি। আর একটা জ্বলে রাসায়নিক দেওয়া। তোমার বাবা যা করেন। তবে আবার বলছি। ওইসব রাসায়নিক মেপে দিতে হয়। না হলে মাছ বা অন্য জীব মরে যাবে।
সাবিনা বলল – পুকুর না থাকলে আমাদের পাড়াটা তো নোংরা গন্ধে ভরে যেত!
- ঠিক তাই। আমরা নোংরা ফেলি, জলাশয় তার কিছুটা পরিষ্কার করে।
Class V ENVS Sample Questions Pattern
class 5 amader paribesh question answer model activity task class 5 , model activity task class 5 sasto sarir sikha , model activity task class 5 poribesh , model activity task class 5 amader paribesh , মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক class 5 পরিবেশ উত্তর ,class 5 model activity task poribesh মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক class 5 পরিবেশ উত্তর
Set 8
১।
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো ১×৫=৫
(খ) শরীরে রক্ত ছড়িয়ে দেওয়ার পাম্পের নাম-(হূৎপিণ্ড / ফুসফুস / অ্যাপেনডিক্স)।
(গ) একটি অমেরুদণ্ডী প্রাণী হল–(কেঁচো/মানুষ/ হাতি)।
২। সঠিক বাক্যের পাশে (√) এবং ভুল বাক্যের পাশে চিহ্ন (x) দাও ১×৩=৩
উত্তরঃ-
(গ) কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত হাড়ের নাম আলনা ও রেডিয়াস।
৩। একটি বাক্যে উত্তর দাও ১×৪=৪
(ক) আমাদের শরীরের বর্ম কোনটি?
(ঘ) হাঁটুর নীচ থেকে গোড়ালি পর্যন্ত হাড়ের নাম কী?
উত্তরঃ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ ।
Set 9
(খ) স্টেথোস্কোপ আবিষ্কার করেন (গ্যালিলিয়ো/ জগদীশচন্দ্র বসু / রেনে লিনেক)।
২। শূন্যস্থান পূরণ করো ১×৩=৩
(ক) শুরুতে বৃষ্টির জলে __________ ________________ থাকে।
(খ) পলিথিন কুচি, অ্যালুমিনিয়াম কুচি হল মাটির______________
উপাদান।
(গ) মাটির সরে যাওয়াকে বলে ______________ উপাদান।
৩। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে-কোনো দুটি) ২×২=৪
Set 10
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
(খ) যক্ষ্মার জীবাণু আবিষ্কৃত হয় প্রায়—(১০০/১৩০/২০০/২৫০) বছর আগে।
(গ) স্টেথোস্কোপ আবিষ্কার করেন (গ্যালিলিয়ো / রেনে লিনেক / জগদীশচন্দ্র বসু)।
(ঘ) দার্জিলিং-এর প্রধান ফসল হল (চা/ ধান/গম)।
২। শূন্যস্থান পূরণ করো
(খ) রসিক বিল ________________ জেলায় অবস্থিত।
(গ) মাটির সজীব জৈব উপাদান হল _____________।
(ঘ) শজারুর লোম ____________ মতো হয়।
(ঙ) হাড়ের জোড়কে বলা হয়________________।
(চ) কলকাতার ঢাল _______________ দিকে।
৩। নীচের প্রশ্নগুলির দু-একটি বাক্যে উত্তর দাও (যে-কোনো পাঁচটি)
উত্তরঃ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ __ _ _ ।
(খ) চামড়ার ব্যবহার লেখো।
উত্তরঃ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ __ _ _ _ _
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ ।
(গ) রক্তাল্পতার জন্য নখের কী কী পরিবর্তন ঘটতে পারে?
উত্তরঃ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ __
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ ।
(ঘ) এমন দুটি কাজের নাম লেখো যাতে হাতের পেশির কাজ হয়।
উত্তরঃ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ ।
উত্তরঃ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ ।
(চ) লিগামেন্ট বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ __ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ ।
Sample Questions Download in PDF Format
Content |
Description |
File
Name |
Class
V Sample Questions Paper |
Subject |
ENVS
( পরিবেশবিদ্যা ) |
File
Format |
PDF |
|
|