# অনুচ্ছেদ রচনা।।শীতের একটি দিন।। হিমেল শী্‌ত।। বর্ষণমুখর একটি রা্‌ত।। উৎসবমুখর শরৎ ।। রুদ্রতাপস গ্রীষ্ম।। ষষ্ঠ শ্রেণি

Songs Lyrics
0
অনুচ্ছেদ রচনা।।শীতের একটি দিন।।  হিমেল শী্‌ত।। বর্ষণমুখর একটি রা্‌ত।। উৎসবমুখর শরৎ ।। রুদ্রতাপস গ্রীষ্ম।। ষষ্ঠ শ্রেণি 

অনুচ্ছেদ রচনা




নিম্নলিখিত বিষয় অবলম্বন করে অনধিক ১০০ শব্দে অনুচ্ছেদ রচনা করো।



১। রুদ্রতাপস গ্রীষ্ম

       বসন্তের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার আকাশে বাতাসে বেজে ওঠে গ্রীষ্মের দুন্দুভি। শুরুহয় রুদ্রতাপস গ্রীষ্মের তপস্যা—তার তেজে পুড়ে যায় বাংলার বাতাস, মাটি আর প্রাণীকুল। 

         বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ হল রুদ্রতাপসের তপস্যাকাল। বৃষ্টিহীন আকাশে সূর্যের তাপে তপ্ত হয়ে ওঠে পৃথিবী। মাটিতে পা রাখা যায় না যায় না বাইরে বের হওয়া।

           প্রখর দাবদাহে মানুষ, জীবজন্তু, পাখি সকলেই হাঁসফাস করে। মাটি হয়ে যায় চৌচির–কোথাও পাওয়া যায় না একফোঁটা জলের চিহ্ন। কিন্তু তবুও সহ্য করতে হয় প্রকৃতির এই ঋতুপর্যায়কে। 
   
         এই দাবদাহের কঠিন জীবনে স্বস্তি পাওয়া যায় বাজারে আম, জাম, কাঁঠালের পসরা দেখে। এই সুস্বাদু ফলগুলি এই সময়েই পাওয়া যায়।


          এই সময়ে সুবিধা বলতে খুব একটা কিছু নেই, বরং আছে অসুবিধা। গরমে দেখা দেয় নানা রোগ-বালাই। তবুও গ্রীষ্মকে মেনে নিতে হয়, কারণ এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে বর্ষারানির আগমন বার্তা।


২। উৎসবমুখর শরৎ


       বর্ষা চলে যেতেই আমাদের কালো মুখ আবার ফরসা হতে থাকে। সূর্যের নবীন কিরণে জেগে ওঠে বাংলার বুকে শরৎকাল, ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে।

           আকাশে দেখা যায় সাদা মেঘের ভেলা, এ প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে করে আনাগোনা সাদা হাঁসের দল। দিকে দিকে ফুঠে ওঠে কাশফুল, আবাহন করে দেবী দুর্গার আগমনকে।

         উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা হয় বাংলার মানুষ। দুর্গাপূজা, ঈদ, দীপাবলির জাদুকাঠিতে বাংলার মানুষের মনে লাগে প্রাণের ছোঁয়া। শরৎকালের সময়টা উৎসবেরই সময়। তাই ছোটো থেকে বড়ো সবাই নেচে ওঠে উৎসবের আঙিনায়।

           এই উৎসব কেবলমাত্র আনন্দলাভের জন্য নয়, এর মধ্যে জেগে ওঠে সকল মানুষের মধ্যে মিলনের আকাক্ষা। সকল ধর্মের, জাতি ও বর্ণের মানুষ উৎসবের আনন্দে একত্রিত হয়ে একাত্ম হয়ে যায়। ভুলে যায় বিভেদের বেড়াজাল। এইটিই এই ঋতুর সার্থকতা।


৩। হিমেল শীত

     পৌষ-মাঘে এল শীত সঙ্গে নিয়ে উত্তরের হিমেল হাওয়া। মানুষকে করে দেয় জবুথবু। প্রকৃতি হয়ে যায় রুক্ষ্ম— যেন কোথাও রসকষ নেই। আর এই রুক্ষ্মতার মধ্যে দেখা দেয় সান্ত্বনা স্বরূপ হরেক ফুল ও ফলের সমারোহ। আর মাঠ-ঘাট ভয়ে যায় নানান সবজির পসরায়। এতরকমের শাকসবজি আর ফল আর কখনও মেলে না। কমলালেবু, আপেল, আঙুর, ন্যাশপাতি আর ফুলকপি, কড়াইশুঁটি এগুলির রসনাকে তৃপ্ত করে।

         রসনার আর-এক উপকরণ আসে খেজুর গাছ থেকে, খেজুরের গুড়, পাটালি—মাতিয়ে দেয় পিঠে, পুলি আর পায়েসকে। বাঙালির ঘরে ঘরে নলেন গুড়ের পায়েস-এর গন্ধে মৌ মৌ করে। 

          ছোটো-বড়ো সকলেই মেতে ওঠে বনভোজনে। ছুটির দিনে নতুন আমেজ নিকটে বা দূরে চলে পিকনিকের আয়োজন। দিকে দিকে শোনা যায় নানা মেলার কথা, শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা, জয়দেবের মেলা আর গঙ্গাসাগরের মেলা। বাঙালি মেতে ওঠে আনন্দ ভ্রমণে।


৪। বর্ষণমুখর একটি রাত

       বিকেল থেকেই কালো মেঘের জমায়েত চলছিল সারা আকাশ জুড়ে। সন্ধ্যার একটু পরেই শুরু হল অঝোর ঝরে বরিষণ। চারিদিক বৃষ্টির ধারাপাতে হয়ে উঠল জলময়। 

     বৃষ্টি, বৃষ্টি আর বৃষ্টি। খাওয়াদাওয়া সেরে নিজের ঘরে বসে বৃষ্টির শব্দ শুনতে লাগলাম। মনের মধ্যে কত না স্মৃতির ভিড়, সে সবের মধ্যে বৃষ্টিপাতের এক অদ্ভুত অনুভূতি জেগে ওঠে। ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম বারান্দায়। দেখতে লাগলাম বৃষ্টিতে স্নান করছে ধরিত্রী। একবার মনে হল ছুটে যাই খোলা জায়গায় নিজেকে ভিজিয়ে নিতে। কিন্তু সাহস হল না, কেন জানি না। মনে হচ্ছে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি এই অপরূপ দৃশ্যকে।

               বৃষ্টি থামছে না, মনে হচ্ছে আজ রাতে আর ঘুম আসবে না, তাই জানালা খুলে দেখলাম সারা এলাকায় বাড়ির মাথায় বৃষ্টিপাতের কী অপরূপ রূপ। কখন জানি না বৃষ্টির ধারার গানে মুগ্ধ হয়ে ঘুমিয়ে গেছি। সকালে উঠে দেখি সব জলে জলাকার।


৫। শীতের একটি দিন


শীতকালের সময় ঘুমটা ভেঙেছে অনেক আগেই কিন্তু উঠতে ইচ্ছে করছে না বিছানা থেকে। জানালা দিয়ে উকি দিয়ে দেখি সূর্যদের এখনো দেখা দেননি। চারদিক ঘন কুয়াশায় সকালটাকে করে রেখেছে অন্ধকার। কি করা যায়, উঠতে হল। 

            বেলা বাড়ল দিননাথ উঁকি দিলেন কুয়াশার পর্দা সরিয়ে। কী মিষ্টি রোদ। ছাদে গিয়ে দাঁড়ালাম, গায়ে মিষ্টি রোদের স্পর্শে একটু তাজা হলাম। দুপুরের দিকে আর একটু পরিষ্কার হল, দেখলাম পাশের বাগানটায় একদল কচিকাঁচাদের ভিড়। বোধহয় পিকনিক করছে, সেখানে বড়োরাও আছেন। সকলেই শীতের আমেজে চড়ুইভাতির মজা নিচ্ছে। মনে হল ছুটে যাই তাদের হলে। এমন সময় দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। চড়ুইভাতির একটি দলে ছিল আর দু-একজন বন্ধু, তারা ডাকতে এসেছে, তাদের আনন্দমেলায় যোগ দিতে। ছুটে গেলাম ওদের দলে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
megagrid/recent